জীবনে অনেক খারাপ অবস্থার মধ্যে পড়লেও এখন কার মত খারাপ অবস্থায় মনে হয় না কোনদিন পরেছে বলে মনে পড়ছে না বৃন্ত থুড়ি বৃন্তার। তার জন্ম হয়েছিল আজ থেকে ৩১ বছর আগে। বাবা মায়ের অত্যন্ত আদরে ছেলে ছিল সে। খুব ই মেধাবি ছাত্র ছিল সে। সেই জন্য সরকার ও তাকে সরকারি খরচে ডাক্তারি পড়াতে দ্বিধা করে নি। সে নিজে ডাক্তার। তাই আজকে সব থেকে বেশি মানসিক যন্ত্রণার ব্যাপার। তার জন্ম ২০৮৩ সালে। এখন ২১১৪ সাল। সে কলেজে ভর্তি হয়েছিল তখন সে ১৬ বছরের মাত্র। প্রচণ্ড মেধাবী ছাত্র ছিল সে। আর ছিল বজ্র কঠিন মানসিকতা। সে মাত্র ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি। কিন্তু ওই টুকু শরিরেই তার ব্যাক্তিত্ব ছাপিয়ে পড়ত। ছাত্র রাজনীতির অনেক বড় জায়গায় ছিল ও। ওর ব্যক্তিত্বের সামনে মেয়েরা কেন ছেলেরাও ঝুঁকে সম্মান করত ওকে। কারন ওর ছিল যুক্তিবাদী মস্তিস্ক। তার কোন কথার ওপরে কথা বলার সাহস কোন ছাত্র কেন শিক্ষক রাও পেতেন না। সাত বছরের ছাত্র জীবনে মেডিকেল কলেজে পাঁচ বছর ই ছিল ছাত্র সভার সভাপতি। এখন হাসপাতালেও সকলে ওকে খুব মান্য করে। সে খুব ভাল একজন ডাক্তার ও। কিন্তু সেটাই সব না। মানুষ সমাজ বদ্ধ জীব। তাই ইচ্ছে না থাকলেও অনেক কিছুই মেনে নিতে হয় সময় ওর সমাজের প্রয়োজনে। সময়ের নিয়মে দেশের আভ্যন্তরীণ এবং শিক্ষা ব্যবস্থা ও সামাজিক ব্যবস্থার আমুল পরিবরতন ঘটেছে। তার কারন ও আছে প্রভূত। নির্বিচারে নারী ভ্রুন হত্যা সমাজ কে প্রায় নারী বর্জিত করে ফেলেছে বললেই চলে। পুরুষে পুরুষে বিবাহ অনেক দিন পূর্বেই চালু হলেও, তাতে নারী সমস্যার সমাধান হয় নি। জনসংখ্যা কমলেও নারী সংখ্যা এখন প্রতি ১০০ পুরুষে ৪০ জন মাত্র। ভীতিজনক ভাবে কম। যেখানে সংখ্যা টি ১০০ জন পুরুষে ১১০ থেকে ১২০ জন হওয়া বাঞ্ছনীয়। বাধ্য হয়ে সরকারের টনক নড়ে। সরকার কিছু খুব ই অত্যন্ত আপত্তিকর এবং যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়। যদিও উপায় ছিল না সেই টি ছাড়া। সেটা হল পুরুষ ভ্রুন ও নারী ভ্রুনের অনুপাত , প্রতি তিনটি নারী সন্তান জন্ম দিলে একটি পুরুষ সন্তান জন্ম দিতে পারবে এমন করে বানান হয়েছিল। বা পুরুষ সন্তানের জন্ম যত সংখ্যক কম করতে সরকার বদ্ধ পরিকর হয়েছিল। প্রয়োজনে পুরুষ ভ্রুন মেরে ফেলাও হত মাতৃ গহ্বরে। যতদিন না পুরুষ নারীর আনুপাত একটা সম্মান জনক জায়গায় আসে। কারন আজ থেকে বিশ বছর আগেও পরিস্থিতি এমন ছিল একজন নারীর সাথে তিন বা চার পুরুষের বিবাহ আইন সিদ্ধ ঘোষণা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তাতে দেখা দিল বিশৃঙ্খল। সমাজে বাস করার মুল স্তম্ভ, শান্তি, সেটাই নষ্ট হতে বসেছিল। অশান্তি বিগ্রহ লেগেই থাকত সমাজের প্রতিটা তলার মানুষের ঘরে। সরকারি ও বেসরকারি চাকুরে দের কাজ করবার ক্ষমতা ও ইচ্ছে দুটোর ই অভাব দেখা দিয়েছিল চূড়ান্ত মাত্রায়। কারন নারী না থাকলে সমাজের মেজাজ টাই বিগরে যায়। নারী তো শুধু সন্তান উতপাদন করে তাই না। নারী মা, নারী বোন, নারী প্রেমিকা, নারী অনুপ্রেরনা, নারী ভালবাসা । স্বাভাবিক ভাবেই এই মানসিক কারনে দেশে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে এতে বিচিত্র কি। দেশের সামগ্রিক আয় কমে গেছিল গত সরকারের তিন গুন। বাধ্য হয়ে দেশের মানুষ সরকার বদলাল। ততদিনে দেশের ডাক্তারি শাস্ত্র ধন্বন্তরি পর্যায়ে পৌঁছে গেছিল। মানুষের মৃত্যু রোগ জনিত কারনে এখন আর হয় না বললেই চলে। জনসংখ্যা কমে যাবার জন্য সরকার শিক্ষা ব্যাপার টাকে আকাশ ছোঁয়া উচ্চতায় নিয়ে গেছিল। দেশের সব কিছুই ছিল বিনা পয়সায়। সেটা শিক্ষা হোক বা চিকিৎসা। মদ খাওয়া হোক বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ফুর্তি। মানুষের মনে কোন দুঃখ ছিল না । ছিল একটাই সমস্যা সেটা ছিল নারী অনুপাত অস্বাভাবিক হ্রাস। মনুষ্য জাতির অবলুপ্তির প্রথম ধাপ। বৃন্ত তখন ছোট। সবে ক্লাস ১০ এ পড়ে। নতুন সরকার এল। গোপনে শেষ ও বিদেশের কিছু বিজ্ঞানি ও ডাক্তার এবং গবেষণাকারী দের নিয়ে একটি বিশেষ সমিতি তৈরি করে পুরুষ কে নারী তে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা শুরু হল। কৃত্রিম উপায় , তাও দেশের বিশিষ্ট মহলের ধারনা হয়ে ছিল যে এতে নারী সমস্যার সমাধান হবে। সরকার আসার তিন বছরের মধ্যেই সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হল পরীক্ষার সফলতা। প্রথম পাঁচ বছর সেই বিজ্ঞানির দল কে সন্তান সম্ভবা নারী রুপান্তরনে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। কিন্তু আজকের দিনে সেটা জল ভাত। সরকার প্রান খুলে ডাক দিয়েছিল সেই সব পুরুশদের যারা পুরুষ সঙ্গী পছন্দ করে। তাদের মধ্যে ৯৯ ভাগ ই রূপান্তরিত হয়েছিল নারী তে। এবং তাদের পুরুষ রাও খুশি হয়েছিল। কিন্তু এই রকম পুরুশদের সংখ্যা ছিল নগন্য। যারা সেই সময়ে নারী তে রূপান্তরিত হয়েছিল তাদের প্রায় সবাই পড়ে অস্ত্রপ্রচার করে সন্তান সম্ভবা হয়েছিল। পরের বছরের গননায় দেখা গেল ৪২ জন নারী হয়েছে প্রতি ১০০ জন পুরুষে। সরকার সামান্য সাফল্য পেয়ে, বেশ মনোযোগ দিল এই রুপান্তরনের ব্যাপার টায়। সংসদে একটা বিল পাস করান হল যেটা সমাজের পক্ষে শুভ হল না অশুভ সেটা বিচারের সময় এখনও আসে নি। বিল টা ছিল অনেক বড়। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হল।